মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো? জানুন বিস্তারিত!

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এবং আসলেই ফ্রিল্যান্সিং কি মোবাইলে করা যায় কিনা এ ধরনের প্রশ্ন আমাদের মনে সব সময়ই ঘুরপাক খায়। বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং জগতে অনেকেই সফলতা অর্জন করেছেন। পূর্বের তুলনায় বর্তমানে লক্ষ্য করলে দেখা যাচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের ডিমান্ড দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর কারণ হিসেবে সময়ের সাথে সকলেই তাদের ব্যবসা সিস্টেমকে আপডেট করার পরিপেক্ষিতে সবকিছুই অনলাইন ভিত্তিক হওয়া শুরু হয়েছে। এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুকলেই বিভিন্ন প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন আমাদের সামনে অটোমেটিক চলে আসে। 
মোবাইল-দিয়ে-ফ্রিল্যান্সিং-কিভাবে-শিখবো
তবে মনে রাখবেন এই বিজ্ঞাপন গুলো কেউ না কেউ পরিচালনা করছে। আর তিনি হলেন একজন ফ্রিল্যান্সার বা ডিজিটাল মার্কেটার। যাদের ল্যাপটপ বা কম্পিউটার নেই তারাও কি মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবে কিনা। আবার তাদের মনে সব সময় একটি কনফিউশন কাজ করে যে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এই বিষয়টি। তাই আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখব এবং মোবাইল দিয়ে করা যায় এমন একটি কাজ আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করব। সুতরাং ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ফি সম্পর্কে এবং মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এ বিষয়গুলো এ টু জেড জানার জন্য অবশ্যই আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত বজায় থাকুন
পোস্ট সূচিপত্র

মোবাইল দিয়ে কি ফ্রিল্যান্সিং সম্ভব

আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় অথবা নিউজ চ্যানেলগুলোতে মাঝে মাঝেই দেখি যে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে অনেকেই সফলতা অর্জন করেছে। বিশেষ করে ইউটিউবে বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠান তাদের সফলতার বিষয়গুলো তুলে ধরে থাকে। সেখানে তাদের অনেক স্টুডেন্ট রয়েছে যারা মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে সফলতা অর্জন করেছে। এ ধরনের নিউজ দেখে আমরা খুব সহজেই বিচলিত হয়ে পড়ি যে আমরা কিভাবে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারি। যদি আপনিও তাদের মত মনে করেন যে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং সম্ভব কিনা। 
তাহলে আপনাকে বলছি যে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে সকল কাজ মোবাইল দিয়ে করা সম্ভব নয়। ধরুন আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন অথবা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর মত কাজ করতে চাচ্ছেন তাহলে কখনোই মোবাইল দিয়ে করা সম্ভব হবে না। তাহলে আপনি যদি মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করার ইচ্ছা পোষণ করেন সে ক্ষেত্রে আপনাকে জানতে হবে যে কোন কোন ধরনের কাজ মোবাইল দিয়ে করা সম্ভব। সাধারণত ওয়েব ডেভলপমেন্ট এর কাজগুলো কোডিং সংক্রান্ত হয়ে থাকে যা মোবাইলে বিভিন্ন ভারী সফটওয়্যার এর কাজ হয়ে থাকে। 

তাহলে বলা বাহুল্য যে এ ধরনের ভারি সফটওয়্যার এর কাজ কখনোই মোবাইল দিয়ে করা সম্ভব নয়। তাহলে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এই প্রশ্নটিতে অবশ্যই ওয়েব ডেভলপমেন্টের মতো কাজগুলো বাদ পড়ে যাবে। সুতরাং আপনি যদি কোন একটি আইটি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হন এবং মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ফি প্রদান করে থাকেন তাহলে তাদের সাথে অবশ্যই পরামর্শ করে নিবেন যে তারা কোন ধরনের কাজ আপনাকে শেখাবে। কেননা বর্তমান সময়ে অনেকেই আপনাকে মোবাইল দিয়ে কাজ করা যায় এরকম লোভনীয় টপিক এর ফাঁদে ফেলতে পারে। 

আর এ ধরনের ফাঁদে পড়তে না চাইলে অবশ্যই আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণভাবে পড়ার চেষ্টা করুন। যাতে করে বুঝতে পারেন যে মোবাইল দিয়ে কোন কোন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কাজ করা সম্ভব। হয়তোবা মোবাইল দিয়ে আপনি ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের বড় বড় কাজের অনলাইন ক্লাসের ভিডিওগুলো দেখে শিখতে পারবেন। কিন্তু সেখানে অবশ্যই প্র্যাকটিসের একটি বিষয় আছে কেননা আপনি যদি শুধুমাত্র ভিডিও দেখেন প্র্যাকটিস না করেন সেক্ষেত্রে কখনোই উক্ত বিষয়টিতে দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন না।

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

আপনি খেয়াল করলে দেখবেন বর্তমান সময়ে মোবাইল ফোনের ব্যবহার অধিক বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি পূর্বের তুলনায় বর্তমানে যে সকল মোবাইল আপডেট করা হয়েছে সেখানে কম্পিউটারের মতো অনেক কাজ খুব সহজেই করা সম্ভব। তবে আমরা আগেই বলেছি যে ওয়েব ডেভলপমেন্ট, গ্রাফিক ডিজাইন এর মত কাজগুলো অবশ্যই আপনাকে কম্পিউটারে করতে হবে। সাধারণ কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো মোবাইল দিয়ে করা সম্ভব এবং সেখান থেকে টাকা ও ইনকাম করা সম্ভব। 

যদি আপনার কাছে একটি ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার না থাকে সেক্ষেত্রে আপনার হাতের মোবাইলটি ব্যবহার করেও ফ্রিল্যান্সিং জার্নি শুরু করতে পারবেন। শুধু প্রয়োজন হবে একটি ইন্টারনেট সংযোগের। এখন প্রশ্ন আসতে পারে আমরা মোবাইল দিয়ে কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারি। তবে তার আগে জানতে হবে মোবাইল দিয়ে কোন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কাজ করা যায়। নিচে মোবাইল দিয়ে কাজ করা যায় এ ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কাজের নাম তুলে ধরা হলো।
  • ডিজিটাল মার্কেটিং (Digital Marketing)
  • কনটেন্ট রাইটিং (Content Writing)
  • ভিডিও এডিটিং (Video Editing)
  • ডাটা এন্ট্রি (Data Entry)
  • লিড জেনারেশন (Lead Generation)
  • অনলাইন রিসার্চ (Online Research)
  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (Social Media Marketing)
ডিজিটাল মার্কেটিং (Digital Marketing): মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এই প্রশ্নটিতে অবশ্যই আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং খুব সহজেই শিখে ফেলতে পারেন। এজন্য আপনি অনলাইন কোর্স করতে পারেন অথবা ইউটিউবে টিউটোরিয়াল ভিডিও দেখেও অনেক কিছু শিখতে পারবেন। বর্তমান সময়ে সকলে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম গুলো অনলাইন ভিত্তি করার চেষ্টা করছে। 

আর তাদের এ ব্যবসাকে অনলাইন ভিত্তি করার জন্য অবশ্যই একজন ডিজিটাল মার্কেটার প্রয়োজন। আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং এর কোন একটি কোর্স করে থাকেন তাহলে অবশ্যই সেখান থেকে টাকা আর্নিং করতে পারবেন।

কনটেন্ট রাইটিং (Content Writing): ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে সেটি হল “Content is King”। অনেকে আছে যারা তাদের প্রোডাক্ট এর জন্য অথবা যে কোন প্রয়োজনে কনটেন্ট রাইটিং এর দরকার পড়ে। তারা বিভিন্ন ওয়েবসাইট এবং তাদের আরো কার্যক্রম গুলো পরিচালনা করার পরিপ্রেক্ষিতে সময় না পেয়ে এ ধরনের কনটেন্ট রাইটারকে হায়ার করে। 

সুতরাং আপনি যদি একজন দক্ষ কন্টেন্ট রাইটার হয়ে থাকেন তাহলে ফাইবার সহ বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকে খুব সহজেই কাজের অর্ডার পেয়ে যাবেন। কনটেন্ট রাইটার হতে হলে অবশ্যই আপনাকে সাবলীল ভাষায় লেখার দক্ষতা অর্জন করতে হবে।

ভিডিও এডিটিং (Video Editing): সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে ইউটিউব প্লাটফর্মে ঢুকলেই বিভিন্ন নজর কারা ভিডিও আমাদের সামনে চলে আসে। সেটা হতে পারে এন্টারটেইনমেন্ট করার জন্য অথবা প্রোডাক্টের রিভিউ ভিডিও। যেটাই হোক না কেন সকল ক্ষেত্রেই প্রয়োজন একজন ভিডিও এডিটর। ভিডিও এডিটিং এর কাজগুলো বর্তমান সময়ে মোবাইল দিয়ে খুব সুন্দর ভাবে করা যাচ্ছে। 

বিশেষ করে KineMaster, Cap Cut এর মত সফটওয়্যার গুলো আপডেট হওয়ার জন্য আপনি মোবাইল দিয়েই ডেস্কটপ মানের ভিডিও এডিটিং করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রেও আপনাকে এডিটিং সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে হবে। যদি একবার ভিডিও এডিটিং খুব ভালো মানের শিখতে পারেন তাহলে মার্কেটপ্লেস এবং মার্কেটপ্লেসের বাইরে থেকেও প্রচুর কাজের অর্ডার পেয়ে যাবেন।

ডাটা এন্ট্রি (Data Entry): মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এবং সেগুলো থেকে টাকা ইনকাম করা যাবে কিনা এ ধরনের প্রশ্নের জবাব দিতে ডাটা এন্ট্রি এর মত কাজের উদাহরণ দেওয়া যেতেই পারে। কেননা ডাটা এন্ট্রির কাজগুলো অনেক সহজ হয়ে থাকে এবং মোবাইল দিয়েই করা সম্ভব। ডাটা এন্ট্রির কাজগুলো সাধারণত মাইক্রোসফট এক্সেল শীট অথবা ওয়ার্ড সিটে করা হয়। 

বর্তমান সময়ে Google Docs এবং Google Sheet এ আপনি খুব সহজেই ডাটা এন্ট্রির কাজ করে জমা দিতে পারবেন‌‌। পাশাপাশি গুগল ডক্সের কাজগুলো ভয়েস কমান্ড এর মাধ্যমে করা যায় যার ফলে টাইপিং করার কোন ঝামেলাই থাকে না। সুতরাং এ ধরনের কাজগুলো মোবাইল দিয়ে শেখা এবং করা সম্ভব।

লিড জেনারেশন (Lead Generation): লিড জেনারেশন এমন একটি কাজ যেখানে শুধুমাত্র কোম্পানির চাহিদা অনুযায়ী তাদের কাস্টমারের ডিটেলস কালেক্ট করা। অনেক আইটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে তারা খুবই কম ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ফি গ্রহণ করে লিড জেনারেশন এর কাজ শিখিয়ে থাকে। একটি কোম্পানির যদি সোলার প্যানেলের বিজনেস থাকে। 

সে ক্ষেত্রে সেই ধরনের কাস্টমারের নাম, ঠিকানা এবং ইমেইল এড্রেস এর প্রয়োজন পড়বে যারা সোলার প্যানেল নিতে আগ্রহী। কেননা যদি সরাসরি কাস্টমারের সাথে কোম্পানিগুলো কমিউনিকেশন করতে পারে সে ক্ষেত্রে তাদের প্রোডাক্ট সেল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আর এজন্যই কোম্পানিগুলো বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস থেকে লিড জেনারেশন এর কাজ করে এ ধরনের ফ্রিল্যান্সার হায়ার করে থাকে।

আপনি ইউটিউবের টিউটোরিয়াল ভিডিও দেখে অথবা কোন একটি ভালো মানের আইটি প্রতিষ্ঠান থেকে কোর্স করে খুব সহজেই লিড জেনারেশনের কাজ শিখে ফেলতে পারবেন। পরবর্তীতে মোবাইল দিয়ে সে ধরনের কাজ মার্কেটপ্লেস থেকে গ্রহণ এবং জমা দিতে পারবেন।

অনলাইন রিসার্চ (Online Research): অনলাইন রিসার্চ এই কাজটি হল কোন একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের প্রোডাক্ট সম্বন্ধে জানার চেষ্টা করে থাকে। ধরুন একটি শোপ কম্পানি নতুন তাদের প্রোডাক্ট লঞ্চ করেছে। এখন তারা অবশ্যই অনলাইন থেকে কাস্টমারদের চাহিদা এবং আকর্ষণের বিষয়গুলো জানার চেষ্টা করবে। পাশাপাশি অনলাইন থেকে কিভাবে তাদের বিজনেস স্ট্রাটেজি আরো উন্নত করা যায় সে সম্পর্কে একজন পরামর্শদাতা খুঁজে থাকবে। 
আর আপনি যদি অনলাইন রিসার্চ এর কাজগুলো খুব ভালোভাবে শিখতে পারেন তাহলে কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই শুধুমাত্র আপনার হাতের মোবাইলটি দিয়ে এ ধরনের কাজ করতে পারবেন। যদিও অনলাইন রিসার্চ এর কাজগুলো শুধুমাত্র আপনি বাইরের কান্ট্রি কে উদ্দেশ্য করে শিখবেন। 

বাংলাদেশে কখনোই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকগুলো কোন পরামর্শদাতা খুঁজবে না। কিন্তু দেশের বাইরের লোকজন যেকোনো ধরনের ব্যবসা শুরু করার আগে তারা অনলাইন থেকে খুটিনাটি সকল বিষয়গুলো জানার চেষ্টা করে থাকে।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (Social Media Marketing): আমরা সর্বপ্রথমে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজের কথা উল্লেখ করেছিলাম। মূলত সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর কাজ হল ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি অংশ। ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ সোশ্যাল মিডিয়া বাদেও আরো বিভিন্ন ধরনের অংশ হিসেবে উল্লেখিত রয়েছে। তবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার জন্য আপনি Facebook, Instagram, Whatsapp এ ধরনের প্লাটফর্ম বেছে নিতে পারেন। 

অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা তাদের প্রোডাক্টগুলো অনলাইনে সেল করার জন্য একজন ডিজিটাল মার্কেট আর হায়ার করে। আর ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবেই আপনি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে তার প্রোডাক্ট বিক্রি নিশ্চিত করতে পারবেন। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে এড ক্যাম্পেইন রানিং সম্পর্কে এক্সপার্ট হতে হবে।

ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখবো

আমরা ইতিমধ্যে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এ বিষয়টি জানার জন্য কোন ধরনের কাজ মোবাইল দিয়ে করা সম্ভব সে সম্পর্কে অবগত হতে পেরেছি। আপনি আর্টিকেলের উপরের অংশে লক্ষ্য করলে দেখবেন সেখানে আমরা উল্লেখ করেছি যে মোবাইল দিয়ে কোন ধরনের কাজ করা সম্ভব। কেননা আপনি যে কাজটি শিখবেন সেটি যদি মোবাইল দিয়ে করা না যায় তাহলে সেটা শিখে কোন লাভ হবে না। 

পাশাপাশি মোবাইল দিয়ে কাজ করা যায় এ ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কাজের যদি ধারণা থাকে তাহলে সে অনুযায়ী আপনি যে কোন ভালো মানের একটি আইটি প্রতিষ্ঠানে ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ফি জমা করে নিশ্চিন্তে ভর্তি হয়ে কাজ শুরু করতে পারেন। তাহলে ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখব এ প্রশ্নটিতে আপনি দুইভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারেন। প্রথমত ভালো মানের আইটি প্রতিষ্ঠানে কোর্স করার মাধ্যমে এবং দ্বিতীয়টি হল ঘরে বসে ইউটিউবে বিভিন্ন টিউটোরিয়াল দেখে ফ্রিল্যান্সিং শেখার।

ইউটিউব থেকে ফ্রিল্যান্সিং শেখা

যদি আইটি প্রতিষ্ঠান ব্যতীত আপনি সরাসরি ইউটিউব থেকে বিভিন্ন টিউটোরিয়াল এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। কেননা যেখানে কোন গাইডলাইন ব্যতীত নিজেই শিখতে চলেছেন সেখানে সময় এবং ধৈর্য দুটোরই প্রয়োজন হবে। আমরা উপরে যে লিড জেনারেশন এর কথা বলেছিলাম। এ কাজটি এতটাই সহজ যে আপনি একদিনেই ইউটিউবের টিউটোরিয়াল ভিডিও গুলো দেখে কাজ শিখে ফেলতে পারবেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস থেকে যদি আপনার ভাগ্য ভালো হয়। 

তাহলে কাজের অর্ডারও পেয়ে যেতে পারেন। আবার অনেক ফেসবুক গ্রুপ রয়েছে যেখানে বড় বড় প্রজেক্টের কাজের জন্য লিড জেনারেশন এক্সপার্ট হায়ার করা হয়। আপনি সেখান থেকেও তাদের সাথে যোগাযোগ করে কাজে নিয়োগ পেতে পারেন। প্রথম অবস্থায় লিড জেনারেশন এর কাজ করে আপনি মাসে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা অনায়াসে ইনকাম করতে পারবেন। চলুন ইউটিউব থেকে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে হলে আপনাকে কোন কোন বিষয় মাথায় রাখতে হবে।
  • সর্বপ্রথমে আপনি কোন বিষয়ে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে যাচ্ছেন সেটি নির্বাচন করুন। যেহেতু ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে সেখান থেকে আপনার পছন্দ অনুযায়ী এবং যে কাজ আপনি করতে পারবেন সে ধরনের কাজ নির্বাচন করুন।
  • যেহেতু মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এটি আপনি জানতে চাচ্ছেন তাই আপনার উচিত হবে উপরে বর্ণনাকৃত মোবাইল দিয়ে যে ধরনের কাজ করা যায় সেখান থেকে কাজ নির্বাচন করা।
  • কাজ নির্বাচন করার পর সেই বিষয়ে আপনি ইউটিউবে সার্চ করবেন। দেখবেন আপনার সামনে অনেক অনেক চ্যানেল এবং ভিডিও চলে এসেছে।
  • এখানে কোন রকম কনফিউশন না হয়ে দেখবেন যে সকল ভিডিওতে প্রচুর পরিমাণে ভিউজ আছে এবং পজেটিভ কমেন্ট রয়েছে সে চ্যানেলগুলো সাবস্ক্রাইব করুন।
  • ভিডিও দেখার সময় কখনো সিঙ্গেল ভিডিও দেখবেন না। আপনার কাজের সেক্টর অনুযায়ী রেকর্ডেড ক্লাস ভিডিও গুলো দেখার চেষ্টা করুন।
  • সিঙ্গেল ভিডিও গুলো না দেখে প্লে লিস্ট আকারে যে সকল ভিডিও আপলোড করা রয়েছে সে ধরনের ভিডিও দেখুন। দেখবেন ক্লাস ওয়ান থেকে শুরু করে একদম শেষ পর্যন্ত তারা একটি প্লে লিস্ট আকারে ভিডিও আপলোড করে রেখেছে।
  • ইউটিউবের ভিডিও গুলো দেখার পাশাপাশি আপনি কাজের প্র্যাকটিস করতে পারেন। কেননা প্র্যাকটিসের ফলে আপনার ভুল ভ্রান্তি ধরা পড়বে এবং দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।
  • প্র্যাক্টিস করার সময় যদি কোনরকম সমস্যা মনে করেন তাহলে সে সকল ভিডিওর কমেন্ট সেকশনে আপনার সমস্যাটি তুলে ধরুন। দেখবেন ভিডিও আপলোড করা ব্যাক্তিটি অবশ্যই আপনাকে একটি রিপ্লাই দিয়েছেন।
এভাবে কমপক্ষে ছয় মাস ইউটিউব ভিডিও দেখে কাজ করার ট্রাই করে যান। একটু সময় পর দেখবেন আপনি মার্কেটপ্লেসে যাওয়ার জন্য উপযোগী হয়ে গেছেন। যদি মনে করেন আপনি কাজ সম্বন্ধে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন এবং যেকোনো প্রজেক্ট এর কাজ করতে পারবেন ঠিক তখনই মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলবেন। আমাদের সাজেশন থাকবে ফাইবারে সর্ব প্রথমে অ্যাকাউন্ট খুলে ট্রাই করা। 

এছাড়াও কে ওয়ার্ক (Kwork), এসইও ক্লার্ক (SEO Clark), লেজিট (Legit) এ ধরনের কম প্রতিযোগিতামূলক মার্কেটপ্লেসে কাজের জন্য ট্রাই করা উচিত। কেননা প্রথম অবস্থায় আপনি যদি ভাল মানের ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে ট্রাই করেন তাহলে সেখান থেকে ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনায় বেশি থাকবে।

ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ফি

ইউটিউব থেকে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এ বিষয়টি আমরা উপরে খুব ভালোভাবে পর্যালোচনা করেছি। ইউটিউব বাদেও আপনি সরাসরি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ফি প্রদান করে ভালো মানের আইটি থেকে কোর্স করেও আপনার পছন্দ অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের কাজ শিখতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে সচেতন হতে হবে কেননা বর্তমান সময়ে প্রচুর পরিমাণে আইটি সেন্টার গড়ে উঠেছে যারা কোর্স করানোর নামে শুধু শুধু প্রতারণা করে থাকে। 

অনেক আইটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা ছেলেমেয়েদের ফ্রিল্যান্সিং শিখানোর নাম করে শুধুমাত্র ফেসবুক পেজ খোলা, ইউটিউব চ্যানেল খোলার মত এ ধরনের নরমাল কাজ শিখিয়ে ছেড়ে দেয়। একজন ডিজিটাল মার্কেটরের শুধুমাত্র ফেসবুক পেজ খুলে টাকা ইনকাম করা সম্ভব নয়। অবশ্যই তাকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং থেকে শুরু করে গুগল এড ক্যাম্পেন সব ধরনের কাজ শিখতে হয় ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে। তবে আপনি যদি শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এক্সপার্ট হয়ে থাকেন তাহলে সেখান থেকেও কাজের অর্ডার পেয়ে যাবেন। 

তাহলে ভালো মানের আইটি চেনার উপায় হল সেখানকার মেন্টর যারা রয়েছেন তারা আদেও কি ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে ধারণা রাখেন কিনা। পূর্বে তাদের স্টুডেন্টের রিভিউ কেমন ছিল সকল কিছু জেনেই ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ফি প্রদান করে ভর্তি হওয়া উচিত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আইটি সেন্টারগুলো তাদের কোর্স ফি রেখে থাকে ১৫ হাজার টাকা। অবশ্য প্রতিষ্ঠান ভেদে এবং আপনি কোন ধরনের কোর্স করতে চাচ্ছেন তার ওপর নির্ভর করে ফি এর পরিমাণ কম বেশি হয়ে থাকবে। তবে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মত কোর্স সাধারণত ১৫ হাজার টাকা দিয়েই করা যায়।

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করা যায় কিনা

আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের আলোচ্য বিষয় ছিল মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো। আমরা সেখানে উল্লেখ করেছিলাম যে মোবাইল দিয়ে ফ্রীল্যান্সিং শেখার পাশাপাশি আপনাকে জানতে হবে যে কোন কোন বিষয়গুলো মোবাইল দিয়ে করা সম্ভব। অর্থাৎ মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে যে ধরনের কাজ করা যাবে আপনাকে শুধুমাত্র সে ধরনের কাজই শেখা উচিত। পরবর্তীতে যদি আপনি ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার ক্রয় করতে পারেন। তখন আপনার ক্যারিয়ার হয়তোবা অন্যদিকে সেট করতে পারবেন। 

আপনি যদি আর্টিকেলের উপরের অংশগুলো মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারবেন যে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করা যায় কিনা এই বিষয়টি সম্পর্কে। অবশ্যই সকল ধরনের কাজ অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সিংয়ের সকল সেক্টরের কাজগুলো আপনি মোবাইল দিয়ে করতে পারবেন না। তবে কোন কোন কাজগুলো মোবাইল দিয়ে করা সম্ভব সে সম্পর্কে বিস্তারিত আমরা উপরে তুলে ধরেছি। আপনি চাইলে আরো একবার আর্টিকেলের উপরের অংশ থেকে একদম শেষ পর্যন্ত পড়ে বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারবেন।

মোবাইল দিয়ে করা যায় এমন একটি কাজের নাম নির্বাচন করুন

আপনি উপরের অংশগুলোতে লক্ষ্য করলে দেখবেন আমরা টোটাল ৭ ধরনের কাজের কথা উল্লেখ করেছি যেগুলো মোবাইল দিয়ে শেখা এবং করা সম্ভব। এখান থেকে যেকোনো একটি কাজ আপনি নির্বাচন করে আপনার ফ্রিল্যান্সিং যাত্রা শুরু করতে পারেন। টোটাল ৭ ধরনের কাজের মধ্যে যদি নির্বাচন করতে চান তাহলে আমরা মনে করব আপনি ডাটা এন্ট্রি দিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন। ডাটা এন্ট্রি এবং লিড জেনারেশন এর কাজগুলো শেখা খুবই সহজ। প্রাথমিক অবস্থায় এ ধরনের কাজ দিয়ে যদি আপনি কিছু টাকা আর্নিং করতে পারেন। 
তারপর সেই টাকা দিয়ে যদি একটি ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার ক্রয় করেন সে ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের অন্যান্য কাজগুলো আপনি খুব সহজে শিখে ফেলতে পারেন। তাহলে আমাদের সাজেশন থাকবে আপনি যদি মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে চান তাহলে ডাটা এন্ট্রি অথবা লিড জেনারেশন এর কাজগুলোর মাধ্যমে শেখা শুরু করুন। অন্যান্য কাজগুলো যেমন ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুগল অ্যাড ক্যাম্পেইন রাম থেকে শুরু করে আরো অন্যান্য কাজ ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার ছাড়া সম্ভব হবে না। 

আবার ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর মত জটিল কাজগুলো অবশ্যই ভালো মানের কম্পিউটার থাকতে হবে। মোবাইল দিয়ে যদি আপনি ফ্রিল্যান্সিং যাত্রা শুরু করতে চান তাহলে ডাটা এন্ট্রি অথবা লিড জেনারেশন এর মত কাজ দিয়ে শুরু করুন।

শেষ কথা

আপনি যদি পড়াশোনা শেষ করে বেকার অবস্থায় বসে থাকেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করার বিষয়টি হতে পারে আপনার জন্য সেরা একটি সিদ্ধান্ত। আবার আপনার কাছে যদি কোনরকম ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার না থাকে সেক্ষেত্রেও আজকের এই আর্টিকেলে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এই বিষয়টি আপনাকে অনেকটাই সাহায্য করবে। পাশাপাশি ভালো মানের আইটি সেন্টারে যদি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ফি দিয়ে আপনি ভর্তি হয়ে একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হিসেবে গড়ে উঠতে পারেন। 

সে ক্ষেত্রে আপনারা চাকরির খোঁজ করতে হবে না। তবে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে সফলতা অর্জন করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ধৈর্য, পরিশ্রম এবং সময় তিনটি বিনিয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি প্রথম অবস্থায় আপনাকে অর্থ বিনিয়োগ করার মন মানসিকতা থাকতে হবে। যদি ফ্রিতে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চান সে ক্ষেত্রে ইউটিউব প্লাটফর্মে সাহায্য নিতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে যদি আপনার কোন রকম সাহায্য এর প্রয়োজন হয় তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে যেকোন রকম তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url